কলকাতা থেকে প‍্যাডেল রিক্সা চালিয়ে সিয়াচেন যাত্রা : প্রকৃতি বাঁচানোর বার্তা প্রচারে রিক্সাওয়ালা

7th August 2021 3:48 pm বর্ধমান
কলকাতা থেকে প‍্যাডেল রিক্সা চালিয়ে সিয়াচেন যাত্রা : প্রকৃতি বাঁচানোর বার্তা প্রচারে রিক্সাওয়ালা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) :  কলকাতা থেকে রিকশা চালিয়ে সিয়াচিনের পথে বেরিয়ে পরেছেন ২৪ পরগনার বারুইপুকুর থানার সাউথ গড়িয়ার বাসিন্দা সত্যেন দাস। ১ আগষ্ট থেকে যাত্রা শুরু করেছেন তিনি। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। অসম্ভবকে সম্ভব করতে চাই মনোবল ও ইচ্ছাশক্তি। তাই ইচ্ছাশক্তি ও মনোবলকে পাথেয় করে এবং কায়িক পরিশ্রমকে জয় করে  অসাধ্য সাধন করার লক্ষ্য নিয়েছেন সত্যেন বাবু। পয়লা আগষ্ট তার শুভ যাত্রা শুরু হয় নিউটাউনের বাবলাতলার বাইকার ব্রাদার্স গ্রুপের পক্ষ থেকে।  দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি সহ অন্যান্যরা তার শুভযাত্রার সূচনা করেন। তবে এই প্রথম নয়, পাহাড়ের টানে ও যুব সমাজকে বার্তা দিতে এর আগেও রিক্সা চালিয়ে সত্যেনবাবু দুবার গেছেন পাহাড়ে। এবারের যাত্রা সফল হলে তার হ্যাট্রিক হবে। বর্ধমান শহরের উল্লাসমোড়ের উপর থেকে সত্যেন বাবু যাবার সময় তিনি জানান,   ২০১৪ সালে তিনি প্রথম ঠিক করেন লাদাখ যাবার। তার ইচ্ছার কথা শুনে বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন, সহকর্মীদের অনেকেই প্রকাশ্যে উপহাস করেছিলেন, অনেকে আবার আড়ালেও হেসেছিলেন। কিন্তু তাদের কটাক্ষে কর্ণপাত করেন নি তিনি। প্রচন্ড জেদ আর কিছু করে দেখানোর অদম্য ইচ্ছার উপর নির্ভর করে সেদিন তিনি বেরিয়ে পরেছিলেন। সেবার তিনি রিক্সাচালিয়ে কলকাতা থেকে বিশ্বশান্তির বার্তা নিয়ে শ্রীনগর হয়ে লাদাখের খারটুংলা পাস অবধি গিয়েছিলেন। সে সময় খারটুংলা পাস বিশ্বের সব থেকে উচ্চ গাড়ি চলাচলের রাস্তা ছিল, উচ্চতা প্রায় ১৮ হাজার ৩৮০ ফিট।  দ্বিতীয়বার,  মানালি হয়ে লাদাখ গিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। এবার গ্লোবাল ওয়ার্মিং, সেভ ওয়াটার ও সেভ আর্থ এর ম্যাসেজ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরার আবেদন নিয়ে সিয়াচিনের পথে রওনা দিয়েছেন তিনি। পাহাড়ের প্রতি নিছক ভালবাসা ও টান ছাড়াও বর্তমান যুব সমাজকে ইচ্ছাশক্তির পাঠ পড়ানোও উদ্দেশ্য রয়েছে সত্যেন বাবুর। সত্যেনবাবুর কথায়, বর্তমান যুব সমাজে যেটা অভাব রয়েছে সেটা হ'ল ইচ্ছাশক্তির। তাই অসাধ্য সাধন করে তাদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান তিনি। যাতে আজকের প্রজন্ম গড্ডালিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে ব্যাতিক্রম কিছু করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যায়। ২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত  রিকশা চালিয়ে লাদাখ যাওয়ার তার রেকর্ড ভাঙতে পারে নি কেউ। প্রথম প্রথম কিছুটা অসুবিধা হলেও এখন অনেকটাই সাবলীল তিনি। তার নাম আর অপরিচিত নয় মানুষের কাছে, অনেকেই কুর্ণিশ করে তার কর্মকান্ডকে। তাই পথেই জুটে যায় দুমুঠো খাবার। তবু রিকশায় রাখা থাকে রান্নার সমস্ত সরঞ্জাম। যেখানে খাবারের কোন ব্যবস্থা থাকে না, সেখানে নিজেই রান্নার ব্যবস্থা করে নেন তিনি। এখন তাকে আর  উপহাস করে না কেউ। যারা একসময় তাকে  বিদ্রুপ করেছিল, আজ তারাই সাফল্য কামনা করে মনে মনে।কারন একজন 'সামান্য' রিকশাওয়ালাই আজ 'অসামান্য' হবার নেশা ধরিয়ে দিয়েছে তাদের অন্তরে, তাদের বিশ্বাসে।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।